Description
“শিব, শক্তি ও ভৈরব”—এই বইটি শুধুই পুরাণ বা ধর্মের গ্রন্থ নয়; এটি মানুষের চেতনার গভীরে প্রবেশের এক আধ্যাত্মিক অভিযান।
শিব—নির্গুণ সচেতনতার প্রতীক।
শক্তি—সৃষ্টি, প্রবাহ ও শক্তিময়তার উৎস।
ভৈরব—অবাধ, অদম্য, ভয়মুক্ত চেতনার আদিরূপ।
এই তিন শক্তির মিলনেই সৃষ্টি হয়েছে এই মহাবিশ্ব, সৃষ্টি হয়েছে মানব-মন, এবং জন্ম নিয়েছে জ্ঞান, যোগ, ধ্যান ও মুক্তির পথ।
এই বইয়ের লক্ষ্য—
• শিবতত্ত্বের গভীর রহস্য সহজ ভাষায় তুলে ধরা
• শক্তির বহুরূপিতা ব্যাখ্যা করা
• ভৈরব দর্শনের ভয়হীনতা পাঠকের মনে জাগানো
• ধ্যান, কুণ্ডলিনী, প্রতীক, যোগ—এসবকে আধুনিক জীবনে প্রয়োগযোগ্য করে দেখানো
• মিথ, দর্শন ও আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটানো
এই বই লিখতে গিয়ে আমি উপলব্ধি করেছি—
শিব, শক্তি এবং ভৈরব ত্রয়ী কেবল পুরাণ নয়;তারা মানুষের ভিতরের আলো, শক্তি ও সাহসের উৎস। প্রতিটি অধ্যায় রচনার সময় আমি তাদের উপস্থিতি, শক্তি ও নীরব আশীর্বাদ অনুভব করেছি। আশা করি পাঠক এই বইয়ের মাধ্যমে নিজের ভিতরের ভয়, ক্লেশ ও অন্ধকার ভেঙে আলোর সন্ধান পাবেন। মহাদেব, মহাশক্তি ও ভৈরব আপনার জীবনে আলো বর্ষণ করুন।
শিবকে বোঝা মানে জীবনকে বোঝা। শিবকে জানা মানে নিজেকে জানা। তিনি আছেন সৃষ্টি, স্থিতি ও লয়ের প্রতিটি ছন্দে—মানুষের অন্তরের আলোয়, নীরব ধ্যানে, ভক্তির অশ্রুতে, দুঃখের মুক্তিতে, তাণ্ডবের রূপান্তরে। এই বই হলো—শিবের পথে হাঁটার জন্য একটি সহজ সেতু। যেখানে গল্প আছে, দর্শন আছে, যোগ আছে, ভক্তি আছে, প্রতীক আছে, শক্তি আছে। এটি ধর্ম নয়—এটি আত্মার জাগরণ।
বইটির প্রতিটি অধ্যায় শেষ হলেও শিবের পথ শেষ হয় না—তিনি অনন্ত।পাঠক হিসেবে আপনি এই যাত্রার অংশ হয়েছেন—এটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আশা করি এই বই আপনাকে ধ্যান, জ্ঞান ও ভক্তির সঠিক পথ দেখাবে।
যেখানে শিব, সেখানে ভয় নেই। যেখানে শক্তি, সেখানে বাধা নেই। যেখানে সত্য, সেখানে মুক্তি অবশ্যম্ভাবী। “নিজের ভিতরের শিবকে জাগিয়ে তুলুন—আপনার জীবন আলোয় ভরে উঠবে।” শিবের মত নীরব হোন, ধৈর্য ধরুন। শিবের মত তাণ্ডব করুন—যা অশুভ, যা দুর্বলতা, যা ভয়—সব দূর করুন। শিবের মত করুণাময় হোন—অন্যের প্রতি ভালোবাসা রাখুন। শিবের মত শক্তিময় হোন—নিজেকে বদলানোর শক্তি অর্জন করুন।
প্রদীপ কুমার রায়—একজন গবেষক মন, আধ্যাত্মিক অনুসন্ধানী এবং বহুগ্রন্থ-রচয়িতা। সনাতন দর্শন, পুরাণ, শিবশক্তি তত্ত্ব ও সাহিত্য তাঁর গবেষণার মূল ক্ষেত্র।
তার লেখনী সহজ, সরল কিন্তু গভীর জ্ঞানে পরিপূর্ণ। পাঠক তাঁর বইয়ে পান—জীবনের দর্শন, ধ্যান, শক্তি, যোগ, ভক্তি এবং অন্তরজাগরণের সুনিপুণ মেলবন্ধন।
তার লেখার মূল উদ্দেশ্য—মানুষকে নিজের অন্তরের শিবকে চিনতে সাহায্য করা।
ব্যাংকের ব্যস্ত অফিসঘর, হিসাবের অগণিত সংখ্যা এবং দায়িত্বের ভারে আবদ্ধ একটি দিনমান জীবনের মধ্যেও একজন মানুষ নীরবে বড় হয়ে ওঠেন—স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার পুরশুরা শাখায় চিফ ম্যানেজার (অফিং) পদে দায়িত্ব পালন করে তিনি তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনের পর অবসর নেন। ব্যাংকিং-এর নানা দায়িত্ব—ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, এইচআর ম্যানেজার, সিস্টেম ম্যানেজার—এই সমস্ত ভূমিকাগুলো যেন তাঁকে শুধু একজন সফল অফিসার নয়, বরং মানুষের জীবন, সম্পর্ক, শৃঙ্খলা ও দায়িত্বের গভীরতা বোঝার সুযোগ করে দিয়েছে।
কিন্তু তাঁর আসল পরিচয় কর্মজীবনে নয়—তাঁর অন্তরের অনুসন্ধানে। সংখ্যার জগতের বাইরে তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন আরেকটি জগৎ—মায়া, রহস্য, প্রেরণা ও সৃজনশীলতার জগৎ। জাদুবিদ্যার প্রতি গভীর আকর্ষণ এবং লেখালেখির প্রতি অদম্য টান তাঁকে পথ দেখিয়েছিল তাঁর প্রথম বই “প্রেরণা” (২০১৩) রচনার দিকে। সেই থেকে কলমের সঙ্গে তাঁর যাত্রা আর থেমে থাকেনি। দেশের নানান খ্যাতনামা পত্রিকা ও সাময়িকীতে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে। জাদুবিদ্যার সূক্ষ্ম তত্ত্বে তাঁর দক্ষতা তাঁকে নিয়ে গেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির মঞ্চে—যেখানে তিনি স্থান পেয়েছেন Magicians’ World Directory–তে।
একাডেমিক দিক থেকেও তিনি এক উজ্জ্বল আলো।ভৌতবিজ্ঞানে অনার্স-সহ BSc, কম্পিউটার সায়েন্সে MSc, PGDCA, তার সঙ্গে CCNA (Global) এবং CAIIB—জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও দক্ষতার বিস্তৃত পরিসর যেন তাঁর জীবনের মধ্যে এক সুন্দর সমন্বয় তৈরি করেছে। ছবি, ভিডিও, অ্যানিমেশন, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, কোবল প্রোগ্রামিং, IRDAI কোর্স—জ্ঞান অর্জনের পথ তিনি কখনোই বন্ধ করেননি।
অবসরোত্তর জীবনে থেমে না গিয়ে তিনি শুরু করেছেন আরেকটি যাত্রা—জ্ঞান বিতরণের, মানুষকে স্পর্শ করার, এবং নিজের চিন্তা বিশ্বজগতের কাছে পৌঁছে দেওয়ার যাত্রা। এখন তিনি যুক্ত আছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞ হিসেবে। পরিচালনা করছেন ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ, ব্লগ এবং ওয়েবসাইট—যেখান থেকে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন পাঠকদের সঙ্গে।
আজ পর্যন্ত তিনি রচনা করেছেন ১৪০ টিরও বেশি গ্রন্থ—যা দেশ-বিদেশের নানান অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে গেছে অগণিত পাঠকের হাতে, ছড়িয়ে দিয়েছে চিন্তা, জ্ঞান ও প্রেরণার আলোকধারা। তিনি কেবল একজন লেখক নন—একজন অনুসন্ধানী, একজন স্বপ্নসাধক, একজন ধ্যানমগ্ন যাত্রী, যিনি প্রতিটি বইয়ে ছড়িয়ে দিতে চান তাঁর সামনে খোলা পথের আলো।