You can access the distribution details by navigating to My Print Books(POD) > Distribution
এই বইটি এই সাইট থেকে শুধুমাত্র ভারতের বাইরের পাঠক-ক্রেতাদের জন্যে বিক্রি করা হচ্ছে।* পাঠক-ক্রেতাদের অনুরোধ, দয়া করে পেমেন্ট করার সময় আপনাদের ঠিকানা এবং আর সব তথ্য সঠিকভাবে দেবেন, নাহলে International Credit Card Transaction বাতিল হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। Shipping-এর জন্যে International Air Mail এবং International Speed Post-এর মধ্যে দ্বিতীয়টা বেছে নেওয়াই নিরাপদ হবে।
===========================================
এই বইকে প্রবন্ধ সংকলন নাম দিয়ে পাঠককে ভয় দেখানোর কোনও বাসনা প্রকাশকের নেই। যে বইয়ে ঠাঁই পায় বামুনের খাদ্যপ্রেম, দাদাঠাকুর, সৈয়দ মুজতবা আলী বা বিরিঞ্চি বাবা-র স্রষ্টা রাজশেখর বসুকে নিয়ে রসোত্তীর্ণ আলোচনা এবং যে বইয়ের লেখক রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য উর্ফ আমাদের প্রিয় ঘনাদা, সেই বইকে তাহলে কী বলা যায়? সত্যিই তো, যে বইয়ে বৈঠকি মেজাজে পরিবেশনা করা হয় বাংলা সাহিত্য, প্রাচীন ভারতের সমুদ্রযাত্রা, নালন্দা বিহার বা কলকাতার ইতিহাসের মতো গুরুগম্ভীর বিষয়, সেই বইকে কী নামে ডাকা যায়? যদি বলি ‘চাপড়ঘণ্ট’?
===========================================
*প্রিয় পাঠক, আপনি যদি ভারতের বাসিন্দা হন, তাহলে রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের প্রথম বই ‘চাপড়ঘণ্ট’ বইটা পেতে আপনার ঠিকানা পাঠিয়ে দিন rohonkuddus@gmail.com-এ। বইয়ের দক্ষিণা ৮০ টাকা মাত্র (বিশেষ ছাড় দিয়ে)।
লেখালেখির জগত আজকে অনেক বেশি উন্মুক্ত। অতীতে বহু পরিশ্রম করে তৈরি অনেক লেখাই হারিয়ে গেছে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর বহু আগেই। কিন্তু আজ বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট, ব্লগ, ওয়েবজিন ইত্যাদির দৌলতে লেখকের পক্ষে অভীষ্ট পাঠকের কাছে পৌছনোর কাজটি তুলনামূলক ভাবে সহজ হয়ে এসেছে। এইসব মাধ্যমে প্রচুর অবান্তর লেখা থাকলেও আমাদের মত পাঠক সুযোগ পাচ্ছেন হাতে গোণা কিছু নির্দিষ্ট লেখক বা লেখিকা কিংবা বৃহৎ প্রকাশনা সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতার বাইরেও যে সব ভাল কাজ হচ্ছে তার কাছাকাছি আসার কিংবা তার রসাস্বাদন করার।
শ্রী রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য ২০০৯ সাল থেকে তাঁর লেখালেখি প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে প্রাথমিক ভাবে বেছে নিয়েছেন এই বিভিন্ন বৈদ্যুতিন গণমাধ্যমগুলিকে। আর ২০১৩ সালে ‘সৃষ্টিসুখ’-প্রকাশনা সংস্থাটির তরফে শ্রী রোহণ কুদ্দুস এগিয়ে এসেছেন এ যাবৎ প্রকাশিত শ্রী ভট্টাচার্যের লিখিত প্রবন্ধগুলি থেকে এগারোটিকে বাছাই করে দুই মলাটের ভেতরে আনার কাজে। ফল – চাপড়ঘণ্ট। খুব স্বাভাবিক কারণেই প্রকাশিত প্রবন্ধগুলি কোনও একটি দিশা মেনে লেখা হয়নি, বরং বিভিন্ন বিষয়কে ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে। লেখার মুডে যেমন হালকা ভাব এসেছে, সেরকম গম্ভীর ভাবও এসেছে। তবু একটা বিষয়ভিত্তিক সাযুজ্য সাতটি প্রবন্ধে চোখে পড়ে সেটি হল প্রাচীন ভারত। অন্য চারটি মূলত চারজন প্রথিতযশা বাঙালির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। যদিও বইয়ে এই জাতীয় কোনও শ্রেণীবিভাগ নেই তবুও প্রথমে এই দ্বিতীয়াংশ থেকে শুরু করি।
শ্রদ্ধা জানানোর জন্যে যে চারজনকে বেছে নিয়েছেন লেখক তাঁরা হলেন ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, রাজশেখর বসু, সৈয়দ মুজতবা আলী ও শরৎচন্দ্র পণ্ডিত। এর মধ্যে ডঃ শহীদুল্লাহ বিস্মৃতপ্রায়। অন্যদের ভুলে না গেলেও তাঁরা গণ্ডিবদ্ধ পরিচিতি নিয়েই টিঁকে আছেন। লেখক এখানেই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন বিশেষতঃ প্রথম দু’জনের ক্ষেত্রে। সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনা করলেও অনায়াস দক্ষতায় সরিয়ে দিয়েছেন গণ্ডি, লেখনীর গুণে স্থানাভাব কখনই পুরো বিষয়টির সম্বন্ধে ধারণা গড়ে তোলার পথে বাধাস্বরূপ হয়ে ওঠে না। ‘ভাষাচার্য ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’ এবং ‘ফটিক ও বিরিঞ্চি বাবা’ রচনা দুটিতে উঠে এসেছে বেশ কিছু অজানা কিংবা স্বল্পশ্রুত তথ্য। যেমন – রাজশেখর বসু কেন ‘পরশুরাম’ ছদ্মনাম নিয়েছিলেন। (বইতে এই ঘটনার বর্ণনায় একটি মুদ্রণপ্রমাদ চোখে পড়ে যা বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে)।
কিন্তু এই দুটি লেখা থেকে যে প্রত্যাশা জাগে তার অনেকটাই ধাক্কা খায় আলীসাহেব এবং দাদাঠাকুর-কে নিয়ে লেখা দুটিতে। আলীসাহেব এবং দাদাঠাকুরের ওপর লেখা দুটি শেষ বিচারে হয়ে দাঁড়ায় মূলত বিভিন্ন পত্রপত্রিকা বা প্রকাশিত বই থেকে সংগ্রহ করা উদ্ধৃতির সমাহার। যথেষ্ট পারদর্শিতা থাকা সত্বেও লেখক এই দুটি লেখাতে কেন তার প্রতি সুবিচার করলেন না সেটা বুঝতে পারলাম না।
এবারে আসি এই সমালোচককৃত শ্রেণীবিভাগের প্রথমাংশে। প্রাচীন ভারত। প্রাবন্ধিকের একেবারেই নিজস্ব বিচরণক্ষেত্র। প্রত্যাশিত ভাবেই এক একটি বিষয় ধরেছেন এবং পাঠককে নিয়ে গেছেন এক অপার্থিব আনন্দের জগতে। শিক্ষা, খাদ্যাভ্যাস, সমাজ, পুস্তক, বাণিজ্য, শহর ও সাহিত্য ভ্রমণ করেছেন এবং করিয়েছেন। তথ্য পরিবেশন করেছেন কখনও স্বভাবসিদ্ধ লঘু রসিকতার ঢংয়ে, কখনও বা অবলম্বন করেন গাম্ভীর্য। ফলত পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটার সুযোগ ঘটে না। বিশেষ করে ‘নালন্দা’ রচনাটিতে শ্রী ভট্টাচার্য লেখার যে ভঙ্গি গ্রহণ করেছেন তাতে পড়ার সময় পাঠকের মনে হতেই পারে তিনি যেন স্বয়ং চোখের সামনে সমস্ত ঘটনা ঘটতে দেখছেন। এই অংশের প্রতিটি প্রবন্ধ তথ্যবহুল এবং প্রাবন্ধিকের বহুমুখী পঠনপাঠনের স্বাক্ষর।
আর পুরো বইটি নিয়ে আরেকটি কথা যেটা বলার তা হল, কয়েকটি লেখা বিশেষত ‘প্রাচীন ভারতের সমুদ্রযাত্রা’ ও ‘বাউনের খাদ্যপ্রেম’ এই দুইটি লেখা আরও একটু সুসম্পাদিত হলে ভাল হত। এবং প্রকাশিত প্রবন্ধগুলির প্রথম প্রকাশকালের উল্লেখ প্রচেষ্টাটিকে আরও উন্নত করতে পারত।
বলা বাহুল্য, এই ছোট্ট বইটির পরিসরও স্বল্প। বিষয়ের অন্দরে খুব বেশি বিস্তারিত যাওয়ার সুযোগ না থাকলেও নতুন ভাবনা জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে এর সাফল্য যে অনিবার্য সে বিষয়ে খুব একটা সন্দেহের অবকাশ নেই বলেই মনে হয়।
চাপড় ঘণ্ট- সিদ্ধার্থ দেবের মতামত
চাপড় ঘন্ট বইটি আমি সবাইকে পড়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। বইটি বিভিন্ন সময় নেট-জগতে প্রকাশিত লেখকের বিভিন্ন প্রবন্ধের একটি সঙ্কলন। প্রত্যেকটি প্রবন্ধ অত্যন্ত তথ্য সমৃদ্ধ। আমি বইটি যেদিন সংগ্রহ করি, সেদিন রাত্রে আহারাদির পর একটু পাতা উলটে দেখছিলাম। তারপর প্রায় নিজের অজান্তেই তন্ময় হয়ে যাই। বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব না। তবে এইটুকু বলতে পারি যে লেখক অনেক অজানা তথ্য পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন।
অধুনা বাঙালী প্রজন্ম ডঃ শহীদুল্লা সম্বন্ধে কতটুকু জানেন জানি না। বহু বছর আগে তাঁর প্রতি যে অন্যায় হয়েছিল তা কিন্তু সবার জানা দরকার এবং তার জন্য আমি লেখককে অভিনন্দন জানাই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশ পরিচয় আরেকটি মুল্যবান রচনা। তা ছাড়া সৈয়দ মুজতবা আলী,দাদাঠাকুর, বাংলা সাহিত্য, নালন্দা ইত্যাদি নানা রকম বিষয়ে চিত্তাকর্ষক আলোচনা রয়েছে।
বইটি মোটে ৯৬ পৃষ্ঠার কিন্তু এটি একটি রেফারেন্স বই হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। মুদ্রণ সম্পর্কে বলতে পারি খুব উচ্চমানের কাগজ ব্যবহার করা হয়েছে, ছাপা এবং বাঁধাই খুব সুন্দর। প্রকাশককে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন।
সবাই পড়বেন। এটি একটি must read....