Description
এই উপন্যাসোপম কাহিনিটি চণ্ডীদাস ও রামী রজকিনীকে নিয়ে লেখা হয়েছে।
চণ্ডীদাস ও রামী রজকিনীকে নিয়ে বঙ্গদেশে, বিশেষ করে, বীরভূম ও বাঁকুড়া জেলায় বহু গল্প-কাহিনি লোক-পরম্পরায় প্রচলিত রয়েছে। বর্তমান লেখক মূলত ওই সব প্রচলিত কাহিনি, ইতিহাস, নীলরতন মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত 'চণ্ডীদাসের পদাবলী', বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ সম্পাদিত 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' এবং তদানীন্তন ধর্মীয়-সামাজিক জীবনের বিবিধ তথ্যের উপর নির্ভর করে রচনা করেছেন এই ইতিহাসাশ্রয়ী কাহিনি 'প্রেম-মাধুর্য' শিরোনামের আখ্যানটি।
আখ্যানটি রচনায় তিনি তদানীন্তন ধর্মীয়-সামাজিক এবং রাজনৈতিক ইতিহাসকে অক্ষুণ্ণ রেখেই গল্পের প্রয়োজনে বেশ কিছু কাল্পনিক চরিত্র এবং ঘটনার বিন্যাস ঘটিয়েছেন। ফলে আখ্যানটি একটি অতি সুখপাঠ্য উপন্যাসে পরিণত হয়েছে।
এছাড়া লক্ষণীয়, আখ্যানটির প্রতিটি পর্বের শেষে পাদটীকা সংযোজন করে লেখক কাহিনিতে ব্যবহৃত বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, তত্ত্ব, শব্দ, বাক্য ইত্যাদি ব্যবহারের প্রয়োজনীয় সূত্রগুলোও একের পর এক তুলে ধরেছেন-- যেগুলো কিনা কৌতূহলী পাঠকের কৌতূহল নিরসনে খুবই সহায়তা করবে।
---অতনু দত্তগুপ্ত। কোলকাতা - ২৮।
দীপক গুহ : জন্ম – ৭ই আষাঢ়, ১৩৫৫ বঙ্গাব্দ। মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে পড়াশোনার জন্য বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। তখন থেকে নিজেই ছিলেন নিজের অভিভাবক। গত শতাব্দীর ছয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে আটের দশকের মাঝামাঝি অসুস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত ঘুরে বেড়িয়েছেন সারা উত্তর-পূর্ব ভারতের আনাচকানাচে। সংগ্রহ করেছিলেন নৃতাত্ত্বিক এবং সমাজ ও লোকাচার ভিত্তিক বহু তথ্য। বস্তুবাদী দার্শনিক দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় অথবা রাহুল সাংকৃত্যায়ন প্রমুখ দার্শনিকদের অনুসারী হয়েও নিজস্ব ভঙ্গিতে এই লেখক পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে প্রকাশ করেছিলেন ছোটো বড়ো বহু প্রবন্ধ এবং বাস্তব ঘটনা প্রসূত অনেক গল্প-কাহিনি।
ইতিমধ্যে তাঁর রচিত বঙ্গদেশ ও দেহাত্মবাদ ভিত্তিক বিশেষ কতগুলো প্রবন্ধের গুরুত্ব বিবেচনা করে আমি লেখকের অনুমতি সাপেক্ষে বঙ্গদেশ ও বাঙ্গালী : উপাসনা, সাধনা এবং দেহাত্মবাদ শিরোনামে এগারো পর্বের একটি সংকলন পুস্তকাকারে প্রকাশ করার ব্যবস্থা করেছি।
এছাড়া পরিবর্তন, প্রতিক্ষণ, বর্তমান দিনকাল, আজকাল, আনন্দবাজার সংস্থা, সমকালীন, FOLKLORE ইত্যাদি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত মুরিয়া উপজাতির ঘোটুল সংস্কৃতি, পাহাড়ি খেড়িয়াদের পাড়া, উড়িষ্যার জুয়াঙ উপজাতি, কাঁথি উপকূলের সামুদ্রিক জেলে, মাদুর শিল্প, কামতাপুর রাজ্যের ইতিহাস, লোকসংগীত ভাওয়াইয়া, তন্ত্র তান্ত্রিক এবং সহজবাদ— ইত্যাদি বহু লেখা একের পর এক পরিমার্জন ও পরিবর্ধনের পর সচেষ্ট হয়েছি বর্তমান প্রযুক্তির সাহায্যে ই-বুক হিসেবে প্রকাশ করার জন্য। যা কিনা পরে পুস্তকাকারে প্রকাশ করতে খুবই সাহায্য করবে।
বয়স এবং শারীরিক অসুস্থতায় লেখক প্রায় শয্যাশায়ী। আমার চেষ্টা, উনি যাতে অন্তত দেখে যেতে পারেন তাঁর ঘুরে বেড়ানো জীবনে যেসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তিনি সংগ্রহ করেছিলেন এবং ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তাঁর যত রচনা পড়েছিল—সেগুলো আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে সংরক্ষণের এই ব্যবস্থা।
প্রযুক্তির সহায়তায় বই প্রকাশের এই প্রচেষ্টা পাঠকের কাজে লাগলে পরিশ্রম সার্থক বলে মনে করব। ধন্যবাদ।
—সম্পাদনা : অতনু দত্তগুপ্ত, কোলকাতা–২৮।