আমাদের তিনটে প্রতিবেশী দেশ আজ ক্ষয়িষ্ণু, খাদের কিনারায়। আফগানিস্থান এবং পাকিস্থান মোটামুটি দেউলিয়া বলা যায়। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ দুটো ক্ষেত্রেই তাদের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। বাংলাদেশ এদের চেয়ে কিছুটা ভালো কিন্তু ভেতরে ভেতরে ক্ষয়িষ্ণু এবং তা দ্রুতহারে। তুলনায় আমাদের দেশের অবস্থা অনেকটাই ভালো। কিন্তু এদেশেও চিন্তা-ভাবনার স্তরে এবং বাস্তবেও ঘুণ ধরেছে নিঃসন্দেহে বলা যায়। কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে দেখা যায়, সব রাষ্ট্রগুলোই কিন্তু আদপে একটাই দেশ ছিল। প্রাচীনকাল থেকে যদি এই ভূখণ্ডের চরিত্রের বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে দেখা যায় আমরা মূলতঃ সিন্ধু সভ্যতার রক্ত বয়ে নিয়ে চলেছি সকলেই। এই ভূখণ্ডের প্রাচীন কালে নাম ছিল জম্বুদ্বীপ এবং আমরা সকলেই হিন্দু বলে পরিচিত ছিলাম। সিন্ধু সভ্যতার মানুষদের হিন্দু বলা হতো। এই ভূখন্ডেই শক-হুন-পাঠান-মোঘল এক দেহে লীন হয়েছে। এত চারিত্রিক উদারতার পরেও কিন্তু এই ভূখন্ডেই দ্বিজাতি তত্ত্ব এসেছিল এবং আমরা ধর্মের নামে রাষ্ট্র তৈরী করেছিলাম। তাহলে এত তাড়াতাড়ি সেইসব রাষ্ট্রের করুন দশা কেন? এর থেকে কি আমাদের কিছু শিক্ষণীয় নেই? কেন সনাতন ধর্মকে আজ হিন্দু ধর্ম বলে সরলীকরণ করা হবে? কেন রাষ্ট্র এবং জাতীয়তাবাদের সাথে ধর্মকে মিশিয়ে দেওয়া হবে? এইসব প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে আগে জানতে হবে আমাদের ভূখন্ডকে, জম্বুদ্বীপকে, রাষ্ট্রকে, জাতীয়তাবাদকে এবং সর্বোপরি সনাতন ধর্মকে যা আজকে হিন্দু ধর্ম বলে পরিচিত। খুব গভীরে না গিয়েও একটা সাধারণ ধারণা যদি আমরা তৈরী করতে পারি তবে গলদগুলো খুঁজে পাবো নিজেরাই। যত রকমের ধ্যান ধারণা পাওয়া যায় এই ব্যাপারে সেগুলোই একজায়গায় আলোচনা করার চেষ্টা করেছি এই বইটিতে যাতে পাঠক নিজেই বুঝতে পারে গলদটা কোথায় এবং আমরা সতর্ক হতে পারি আগামীদিনের অন্ধকার ভবিষ্যতের থেকে।