You can access the distribution details by navigating to My pre-printed books > Distribution
বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলীয় এলাকা জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে অত্যন্ত ঝূকিপূর্ন এবং ক্রমবর্ধমান হারে প্রাকৃতিক দূর্যোগ বাড়ছে। যেমনঃ স্্্্্্্্্্্্্্্্াইক্লোন, জলোচ্ছাস, ওয়াবদা ভেড়ীবাঁধ ভাঙন, অধিক বৃষ্টিপাত, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, খরা ও লবনাক্ততা বৃদ্ধি ইত্যাদি। এসব কারনে এলাকার মানুষ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছে। মাটিতে লবনাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে। উপকুলীয় এলাকায় অবস্থিত গ্রামগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের করনে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন। কিছু পরিবেশগত ঝুঁকি এই এলাকার মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা এবং জীবন জীবিকাকে সরাসরি ঝুঁকিপূর্ন করে তুলেছে। কৃষি খাতে মানুষ ধান ও সবজি সঠিক পরিমানে উৎপাদন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। গরীব মানুষ বিশেষ করে হতদরিদ্ররা যেহেতু তাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা কম, সে কারনে সামাজিক এবং পারিবারিক বন্ধন অটুট রেখে জলবায়ু পরিবর্তনগত ঝুকির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সরকারী-বেসরকারী সুযোগ সুবিধা গুলিতে তাদের সুযোগ কমে যাচ্ছে। যে সকল মানুষরা অসচেতন তাদের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি সমুহ অত্যন্ত ধ্বংসাত্বক। গ্রামের একটি বড় জনগোষ্ঠি জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ গুলো সম্পর্কে সচেতন নয়। জলবায়ূ পরিবর্তন জনিত ক্ষতিকর প্রভাব তাদের টেকসই জীবিকা এবং খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সুপেয় পানির সংকট বাড়ছে। বিভিন্ন রোগ বালাই বেড়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ মানুষ পুিষ্টহীনতায় ভুগছে।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ উপক‚লীয় অঞ্চলে বসবাস করে। এই উপক‚লে মানুষের বাস যাদের অধিকাংশ কৃষিজীবি, মৎস্যজীবি, এবং সুন্দরবনের মধু সংগ্রহকারী। সমুদ্র উন্মুক্ত হওয়ায় এদু’টি উপজেলায় লবন পানির অনুপ্রবেশ, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশী। গ্রীষ্ম এখন আগের চেয়ে অনেক বেশী উত্তপ্ত ও দীর্ঘতর, অনিয়মিত বৃষ্টি ও খরা এ এলাকার মানুষের জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছে। সমূদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ায় অধিক এলাকা নোনা পানিতে গ্রাস করে ফেলছে। ফলে মাটি ও মিঠা পানির আধারগুলো লবনাক্ত হয়ে পড়ছে। শষ্য ক্ষেতে সেচের জন্য মিঠা পানির স্বল্পতায় কৃষককে একমাত্র বৃস্টির পানির উপর নির্ভরশীল করে ফেলেছে। ফলে সারা বছর জুড়ে আবাদী জমিগুলো এখন এক ফসলী জমিতে পরিণত হয়েছে, যা খাদ্য নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘিœত করছে। এক শ্রেণীর ধনী মানুষ লবনাক্ততার সুযোগে কৃষি জমিতে অপরিকল্পিতভাবে চিংড়ি চাষ শুরু করেছে, যা মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাচ্ছে এবং অধিকাংশ দরীদ্র মানুষ বেকার হয়ে যাচ্ছে। বিকল্প জীবিকায়নের আশায় কর্মক্ষম পুরুষ পরিবার ফেলে দুরে কোথার চলে যাচ্ছে। অনেকে পার্শ্ববর্তি সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে হিং¯্র বাঘের আক্রমনে প্রাণ হারাচ্ছে।
জনগনের এই সকল অভিঘাত মোকাবেলার স্বক্ষমতা তৈরী করতে হলে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া এবং সে সকল উদ্যোগের উপর যথাযথ প্রশিক্ষন প্রদান করতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে অল্প জায়গায় ও স্বল্প বিনিয়োগে উন্নত উপায়ে, ছাগল পালন, হাঁস ও মুরগি, কোয়েল ও কবুতর পালনের মাধ্যমে ডিম ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি করে পরিবারের আয়, খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করা যেতে পারে। ছোট পুকুরে ও খাঁচায় মাছ চাষ, মেলে চাষ, মৌমাছি চাষ করে সুন্দরবন নির্ভরশীলতা এবং স্থায়ী ও মৌসুম ভিত্তিক অভিবাসন কমিয়ে আনা সম্ভব। এই প্রশিক্ষণ সহায়িকা অংশগ্রহনকারীদের সঠিক তথ্য বিষয় ভিত্তিক জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি ও সমন্বয় করার মাধ্যমে নতুন কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
Currently there are no reviews available for this book.
Be the first one to write a review for the book প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমানের উন্নয়ন ও আয়বর্ধক কর্ম প্রশিক্ষণ মডিউল.